প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার ভোগ্যপণ্য ও অন্যান্য দ্রব্যের আকার, আকৃতি ও ধরনের ওপর এ পরিমাপ পদ্ধতি নির্ভর করে। দৈর্ঘ্য মাপার জন্য, ওজন পরিমাপ করার জন্য ও তরল পদার্থের আয়তন বের করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি রয়েছে। ক্ষেত্রফল ও ঘনফল নির্ণয়ের জন্য দৈর্ঘ্য পরিমাপ দ্বারা তৈরি পরিমাপ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। আবার জনসংখ্যা, পশুপাখি, গাছপালা, নদীনালা, ঘরবাড়ি, যানবাহন ইত্যাদির সংখ্যাও আমাদের জানার প্রয়োজন হয়। গণনা করে এগুলো পরিমাপ করা হয়।
অধ্যায় শেষে শিক্ষার্থীরা
➤ দেশীয়, ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতি ব্যাখ্যা করতে পারবে এবং সংশ্লিষ্ট পদ্ধতির সাহায্যে দৈর্ঘ্য, ক্ষেত্রফল, ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন নির্ণয় সংবলিত সমস্যার সমাধান করতে পারবে।
➤ দেশীয়, ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে দৈনন্দিন জীবনে প্রচলিত পরিমাপকের সাহায্যে পরিমাপ করতে পারবে।
যেকোনো গণনায় বা পরিমাপে একক প্রয়োজন। গণনার জন্য একক হচ্ছে প্রথম স্বাভাবিক সংখ্যা ১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যকে ১ একক ধরা হয়। অনুরূপভাবে, ওজন পরিমাপের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওজনকে একক ধরা হয়, যাকে ওজনের একক বলে। আবার তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের এককও অনুরূপভাবে বের করা যায়। ক্ষেত্রফল পরিমাপের ক্ষেত্রে ১ একক দৈর্ঘ্যের বাহুবিশিষ্ট একটি বর্গাকার ক্ষেত্রকে একক ধরা হয়। একে ১ বর্গ একক বলে। তদ্রূপ ১ একক দৈর্ঘ্যের বাহুবিশিষ্ট একটি ঘনকের ঘনফলকে ১ ঘন একক বলে। সকলক্ষেত্রেই এককের মাধ্যমে গণনায় বা পরিমাপে সম্পূর্ণ পরিমাপের ধারণা লাভ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন একক রয়েছে।
বিভিন্ন দেশে পরিমাপের জন্য বিভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি প্রচলিত থাকায় আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে ও আদান-প্রদানে অসুবিধা হয়। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে ও আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে পরিমাপ করার জন্য আন্তর্জাতিক রীতি তথা মেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ পরিমাপের বৈশিষ্ট্য হলো এটা দশগুণোত্তর। দশমিক ভগ্নাংশের দ্বারা এ পদ্ধতিতে পরিমাপ সহজে প্রকাশ করা যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সে প্রথম এ পদ্ধতির প্রবর্তন করা হয়।
বাংলাদেশে ১লা জুলাই, ১৯৮২ সাল থেকে মেট্রিক পদ্ধতি চালু করা হয়। এখন দৈর্ঘ্য, ক্ষেত্রফল, ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন প্রতিটি পরিমাপেই এ পদ্ধতি পুরোপুরি প্রচলিত রয়েছে।
দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক মিটার। পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দ্রাঘিমা রেখা বরাবর বিষুবরেখা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের কোটি ভাগের এক ভাগকে এক মিটার হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তীতে প্যারিস মিউজিয়ামে রক্ষিত এক খণ্ড ‘প্লাটিনাম ও ইরিডিয়ামের তৈরি রড'-এর দৈর্ঘ্য এক মিটার হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। এ দৈর্ঘ্যকেই একক হিসেবে ধরে রৈখিক পরিমাপ করা হয়। দৈর্ঘ্যের পরিমাপ ছোট হলে সেন্টিমিটারে এবং বড় হলে কিলোমিটারে প্রকাশ করা হয়। দৈর্ঘ্যের একক মিটার থেকে মেট্রিক পদ্ধতি নামকরণ করা হয়েছে।
ওজন পরিমাপের একক গ্রাম। এটি মেট্রিক পদ্ধতির একক । কম ওজনের বস্তুকে গ্রামে এবং বেশি ওজনের বস্তুকে কিলোগ্রাম (কে.জি.)-এ প্রকাশ করা হয়।
তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের একক লিটার। এটি মেট্রিক পদ্ধতির একক। অল্প আয়তনের তরল পদার্থের পরিমাপে লিটার ও বেশি পরিমাপের জন্য কিলোলিটার ব্যবহার করা হয়।
মেট্রিক পদ্ধতিতে কোনো দৈর্ঘ্যকে নিম্নতর থেকে উচ্চতর অথবা উচ্চতর থেকে নিম্নতর এককে পরিবর্তিত করতে হলে, অঙ্কগুলো পাশাপাশি লিখে দশমিক বিন্দুটি প্রয়োজনমতো বামে বা ডানে সরাতে হবে।
যেমন, ৫ কি. মি. ৪ হে. মি. ৭ ডেকা.মি. ৬ মি. ৯ ডেসি.মি. ২ সে. মি. ৩ মি. মি.
= (৫০০০০০০+৪০০০০০+৭০০০০+৬০০০+৯০০+২০+৩)
= ৫৪৭৬৯২৩ মি.মি. = ৫৪৭৬৯২.৩ সে.মি = ৫৪৭৬৯.২৩ ডেসি.মি. = ৫৪৭৬.৯২৩ মি. = ৫৪৭.৬৯২৩ ডেকা.মি = ৫৪.৭৬৯২৩ হে.মি. = ৫.৪৭৬৯২৩ কি.মি.
আমরা জানি, কোনো দশমিক সংখ্যার কোনো অঙ্কের স্থানীয় মান এর সন্নিকটবর্তী ডান অঙ্কের স্থানীয় মানের দশ গুণ এবং এর অব্যবহিত বাম অঙ্কের স্থানীয় মানের দশ ভাগের এক ভাগ। মেট্রিক পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্য, ওজন বা আয়তন মাপার ক্রমিক এককগুলোর মধ্যেও এরূপ সম্পর্ক বিদ্যমান আছে। সুতরাং, মেট্রিক পদ্ধতিতে নিরূপিত কোনো দৈর্ঘ্য, ওজন বা আয়তনের মাপকে দশমিকের সাহায্যে সহজেই যেকোনো এককে প্রকাশ করা যায়।
নিচে গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষা হতে গৃহীত স্থানীয় মানের একটি ছক দেওয়া হলো :
গ্রিক ভাষা হতে গৃহীত | একক | ল্যাটিন ভাষা হতে গৃহীত | ||||
সহস্র | শতক | দশক | দশমাংশ | শতাংশ | সহস্রাংশ | |
১০০০ কিলো | ১০০ হেক্টো | ১০ ডেকা | ১ মিটার গ্রাম লিটার | ডেসি | সেন্টি | মিলি |
গ্রিক ভাষা থেকে গুণিতকবোধক এবং ল্যাটিন ভাষা থেকে অংশবোধক শব্দ এককের নামের পূর্বে উপসর্গ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে।
গ্রিক ভাষায় ডেকা অর্থ ১০ গুণ, হেক্টো অর্থ ১০০ গুণ এবং কিলো অর্থ ১০০০ গুণ। ল্যাটিন ভাষায় ডেসি অর্থ দশমাংশ, সেন্টি অর্থ শতাংশ এবং মিলি অর্থ সহস্রাংশ।
মেট্রিক পদ্ধতি | ব্রিটিশ পদ্ধতি |
১০ মিলিমিটার (মি. মি.) = ১ সেন্টিমিটার (সে. মি.) ১০ সেন্টিমিটার = ১ ডেসিমিটার (ডেসি.মি.) ১০ ডেসিমিটার = ১ মিটার (মি.) ১০ মিটার = ১ ডেকামিটার (ডেকা.মি.) ১০ ডেকামিটার = ১ হেক্টোমিটার (হে. মি.) ১০ হেক্টোমিটার = ১ কিলোমিটার (কি. মি.) | ১২ ইঞ্চি = ১ ফুট ৩ ফুট = ১ গজ ১৭৬০ গজ = ১ মাইল ৬০৮০ ফুট = ১ নটিকেল মাইল ২২০ গজ = ১ ফার্লং ৮ ফার্লং = ১ মাইল |
দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক : মিটার |
১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে. মি. (প্রায়) ১ গজ = ০.৯১৪৪ মি.(প্রায়) ১ মাইল = ১.৬১ কি. মি. (প্রায়) | ১ মিটার = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি (প্রায়) ১ কি. মি. = ০.৬২ মাইল (প্রায়)
|
মেট্রিক ও ব্রিটিশ পরিমাপের সম্পর্ক সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তাই এ সম্পর্ক আসন্নমান হিসেবে কয়েক দশমিক স্থান পর্যন্ত মান নিয়ে প্রকাশ করা হয়।
ছোট দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য স্কেল ব্যবহৃত হয়। বড় দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য ফিতা ব্যবহার করা হয় । ফিতা ৩০ মিটার বা ১০০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে।
কাজ : ১। স্কেল দিয়ে তোমার বেঞ্চটির দৈর্ঘ্য ইঞ্চি ও সেন্টিমিটারে মাপ। এ হতে ১ মিটার সমান কত ইঞ্চি তা নির্ণয় কর। ২ । উপরের সম্পর্ক হতে ১ মাইল সমান কত কিলোমিটার তা-ও নির্ণয় কর। |
উদাহরণ ১। একজন দৌড়বিদ ৪০০ মিটারবিশিষ্ট গোলাকার ট্র্যাকে ২৪ চক্কর দৌড়ালে, সে কত দূরত্ব দৌড়াল?
সমাধান : ১ চক্কর দৌড়ালে ৪০০ মিটার হয়।
২৪ চক্কর দৌড়ালে দূরত্ব হবে (৪০০ x ২৪) মিটার বা ৯৬০০ মিটার বা ৯ কিলোমিটার ৬০০ মিটার। অতএব, দৌড়বিদ ৯ কিলোমিটার ৬০০ মিটার দৌড়াল।
প্রত্যেক বস্তুর ওজন আছে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন এককের সাহায্যে বস্তু ওজন করা হয়।
১০ মিলিগ্রাম (মি. গ্রা.) = ১ সেন্টিগ্রাম (সে.গ্রা.) ১০ সেন্টিগ্রাম = ১ ডেসিগ্রাম (ডেসিগ্রা.) ১০ ডেসিগ্রাম = ১ গ্রাম (গ্রা.) ১০ গ্রাম = ১ ডেকাগ্রাম (ডেকা গ্ৰা.) ১০ ডেকাগ্রাম = ১ হেক্টোগ্রাম (হে.গ্ৰা.) ১০ হেক্টোগ্রাম = ১ কিলোগ্রাম (কে.জি.) |
ওজন পরিমাপের একক : গ্রাম | ১ কিলোগ্রাম বা ১ কে.জি. = ১০০০ গ্রাম |
মেট্রিক পদ্ধতিতে ওজন পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত আরও দুইটি একক আছে। অধিক পরিমাণ বস্তুর ওজন পরিমাপের জন্য কুইন্টাল ও মেট্রিক টন একক দুইটি ব্যবহার করা হয়।
১০০ কিলোগ্রাম = ১ কুইন্টাল ১০০০ কিলোগ্রাম = ১ মেট্রিক টন |
কাজ : ১ । দাগকাটা ব্যালেন্স দ্বারা তোমরা তোমাদের ৫টি বইয়ের ওজন বের কর। ২ । ডিজিটাল ব্যালেন্সের সাহায্যে তোমাদের ওজন নির্ণয় কর। |
উদাহরণ ২। ১ মেট্রিক টন চাল ৬৪ জন শ্রমিকের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দিলে প্রত্যেকে কী পরিমাণ চাল পাবে?
সমাধান : ১ মেট্রিক টন = ১০০০ কেজি
৬৪ জন শ্রমিক পায় ১০০০ কেজি চাল
= ১৫.৬২৫ কেজি চাল
= ১৫ কেজি ৬২৫ গ্রাম চাল
প্রত্যেক শ্রমিক ১৫ কেজি ৬২৫ গ্রাম চাল পাবে।
কোনো তরল পদার্থ কোনো ধারকের যতখানি জায়গা নিয়ে থাকে তা এর আয়তন। একটি ঘনবস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা আছে। কিন্তু কোনো তরল পদার্থের নির্দিষ্টভাবে তা নেই। যে পাত্রে তরল পদার্থ রাখা হয় তা সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। যার কারণে তরল পদার্থের আয়তন মাপার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ঘনবস্তুর আকৃতির মাপনি বা কাপ ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে আমরা সাধারণত লিটার মাপনি ব্যবহার করি। তবে বর্তমান বাজারে মিলিলিটার এককে দাগাঙ্কিত নির্দিষ্ট পরিমাপের কাপ, আয়তন মাপক চোঙ, কোনক আকৃতির পাত্র বা সিলিন্ডার আকৃতির মগ পাওয়া যায় যা ফুড গ্রেড প্লাস্টিক, স্বচ্ছ কাচ, এলুমিনিয়াম বা টিনের শিট দ্বারা তৈরি থাকে। এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে তরল পদার্থের আয়তন মাপার ক্ষেত্রে গিল, পিন্ট, কোয়ার্ট, গ্যালন, তরল আউন্স ইত্যাদি মাপনিও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সাধারণত দুধ, অ্যালকোহল, তেল এবং অন্যান্য তরল পদার্থ মাপার ক্ষেত্রে উল্লিখিত পাত্রগুলো ব্যবহার করা হয়। ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে বর্তমানে ভোজ্যতেল, খাবার পানি, কোমল পানীয়, মেশিন তেল ইত্যাদি মিলিলিটার বা লিটারে বোতলজাত করে বিক্রি করা হচ্ছে।
তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের মেট্রিক এককাবলি
১০ মিলিলিটার (মি. লি.) = ১ সেন্টিলিটার (সে.লি.) ১০ সেন্টিলিটার = ১ ডেসিলিটার (ডেসিলি.) ১০ ডেসিলিটার = ১ লিটার (লি.) ১০ লিটার = ১ ডেকালিটার (ডেকালি.) ১০ ডেকালিটার = ১ হেক্টোলিটার (হে.লি.) ১০ হেক্টোলিটার = ১ কিলোলিটার (কি. লি.) |
তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের একক : লিটার |
মন্তব্য : ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ ঘনসেন্টিমিটার (Cubic Centimetre) বিশুদ্ধ পানির ওজন ১ গ্রাম।(Cubic Centimetre) কে সংক্ষেপে ইংরেজিতে c. c. (সি.সি.) লেখা হয়।
১ লিটার বিশুদ্ধ পানির ওজন ১ কিলোগ্রাম |
মেট্রিক এককাবলিতে যেকোনো একটি পরিমাপের এককাবলি জানা থাকলে অপরগুলো সহজে মনে রাখা যায়। দৈর্ঘ্যের এককাবলি জানা থাকলে ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের এককগুলো শুধু মিটারের জায়গায় 'গ্রাম' বা 'লিটার' বসালেই পাওয়া যায় ।
কাজ : ১। তোমার পানীয়জলের পাত্রের ধারণক্ষমতা কত সি. সি. পরিমাপ কর এবং তা ঘনইঞ্চিতে প্রকাশ কর। ২। শিক্ষক কর্তৃক নির্ধারিত অজানা আয়তনের একটি পাত্রের আয়তন অনুমান কর । তারপর এর সঠিক আয়তন বের করে ভুলের পরিমাণ নির্ণয় কর। |
উদাহরণ ৩। একটি চৌবাচ্চার দৈর্ঘ্য ৩ মিটার, প্রস্থ ২ মিটার ও উচ্চতা ৪ মিটার। এতে কত লিটার এবং কত কিলোগ্রাম বিশুদ্ধ পানি ধরবে?
সমাধান : চৌবাচ্চাটির দৈর্ঘ্য = ৩ মিটার, প্রস্থ = ২ মিটার এবং উচ্চতা = ৪ মিটার
চৌবাচ্চাটির আয়তন = (৩ x ২ x ৪) ঘন মি. = ২৪ ঘন মি.
= ২৪০০০০০০ ঘন সে. মি
= ২৪০০০ লিটার [১০০০ ঘন সে. মি. = ১ লিটার]
১ লিটার বিশুদ্ধ পানির ওজন ১ কিলোগ্রাম।
২৪০০০ লিটার বিশুদ্ধ পানির ওজন ২৪০০০ কিলোগ্রাম।
অতএব, চৌবাচ্চাটিতে ২৪০০০ লিটার বিশুদ্ধ পানি ধরবে এবং এর ওজন ২৪০০০ কিলোগ্রাম।
আয়তাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = দৈর্ঘ্যের পরিমাপ x প্রস্থের পরিমাপ বর্গাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = (বাহুর পরিমাপ)² ত্রিভুজাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ × ভূমির পরিমাপ × উচ্চতার পরিমাপ| |
ক্ষেত্রফল পরিমাপের একক : বর্গমিটার |
ক্ষেত্রফল পরিমাপে মেট্রিক এককাবলি |
---|
১০০ বর্গসেন্টিমিটার (ব. সে. মি.) = ১ বর্গডেসিমিটার (ব. ডেসিমি.) ১০০ বর্গডেসিমিটার = ১ বর্গমিটার (ব. মি.) ১০০ বর্গমিটার = ১ এয়র (বর্গডেকামিটার) ১০০ এয়র (বর্গডেকামিটার) = ১ হেক্টর বা ১ বর্গহেক্টোমিটার ১০০ বর্গহেক্টোমিটার = ১ বর্গকিলোমিটার |
ক্ষেত্রফল পরিমাপে ব্রিটিশ এককাবলি | ক্ষেত্রফল পরিমাপে দেশীয় এককাবলি |
---|---|
১৪৪ বর্গইঞ্চি = ১ বর্গফুট ৯ বর্গফুট = ১ বর্গগজ ৪৮৪০ বর্গগজ = ১ একর ১০০ শতক (ডেসিম্ল) = ১ একর | ১ বর্গহাত = ১ গণ্ডা ২০ গণ্ডা = ১ ছটাক ১৬ ছটাক = ১ কাঠা ২০ কাঠা = ১ বিঘা |
ক্ষেত্রফল পরিমাপে মেট্রিক ও ব্রিটিশ পদ্ধতির সম্পর্ক |
---|
১ বর্গসেন্টিমিটার = ০.১৬ বর্গইঞ্চি (প্রায়) ১ বর্গমিটার = ১০.৭৬ বর্গফুট (প্রায়) ১ হেক্টর = ২.৪৭ একর (প্রায়) ১ বর্গইঞ্চি = ৬.৪৫ বর্গসেন্টিমিটার (প্রায়) ১ বর্গফুট = ৯২৯ বর্গসেন্টিমিটার (প্রায়) ১ বর্গগজ = ০.৮৪ বর্গমিটার (প্রায়) ১ বর্গমাইল = ৬৪০ একর |
ক্ষেত্রফল পরিমাপে মেট্রিক, ব্রিটিশ ও দেশীয় এককাবলির সম্পর্ক |
---|
১ বর্গহাত = ৩২৪ বর্গইঞ্চি ১ বর্গগজ বা ৪ গণ্ডা = ৯ বর্গফুট = ০.৮৩৬ বর্গমিটার (প্রায়) ১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট = ৮০ বর্গগজ = ৬৬.৮৯ বর্গমিটার (প্রায়) ১ বিঘা = ১৬০০ বর্গগজ = ১৩৩৭.৮ বর্গমিটার (প্রায়) ১ একর = ৩ বিঘা ৮ ছটাক = ৪০৪৬.৮৬ বর্গমিটার (প্রায়) ১ শতক = ৪৩৫.৬ বর্গফুট = ১০০০ বর্গকড়ি (১০০ কড়ি = ৬৬ ফুট) ১ বর্গমাইল = ১৯৩৬ বিঘা ১ বর্গমিটার = ৪.৭৮ গণ্ডা (প্রায়) = ০.২৩৯ ছটাক (প্রায়) ১ এয়র = ২৩.৯ ছটাক (প্রায়) |
কাজ : ১ । স্কেল দিয়ে তোমার একটি বইয়ের ও পড়ার টেবিলের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ইঞ্চি ও সেন্টিমিটারে মেপে উভয় এককে এদের ক্ষেত্রফল নির্ণয় কর। এ থেকে ১ বর্গইঞ্চি ও ১ বর্গসেন্টিমিটারের সম্পর্ক বের কর। ২ । দলগতভাবে তোমরা বেঞ্চ, টেবিল, দরজা, জানালা ইত্যাদির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ স্কেলের সাহায্যে ইঞ্চি ও সেন্টিমিটারে মেপে এগুলোর ক্ষেত্রফল বের কর। |
উদাহরণ ৪। ১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সেন্টিমিটার এবং ১ একর = ৪৮৪০ বর্গগজ। ১ একরে কত বর্গমিটার?
সমাধান : ১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে. মি.
৩৬ ইঞ্চি বা ১ গজ = ২.৫৪ × ৩৬ সে. মি.
= ৯১.৪৪ সে. মি.
মিটার = ০.৯১৪৪ মিটার
গজ × ১ গজ = ০.৯১৪৪ মিটার x ০.৯১৪৪ মিটার
বা, ১ বর্গগজ = ০.৮৩৬১২৭৩৬ বর্গমিটার
৪৮৪০ বর্গগজ = ০.৮৩৬১২৭৩৬ × ৪৮৪০ বর্গমিটার
= ৪০৪৬.৮৫৬৪২২৪০
= ৪০৪৬.৮৬ ব.মি. (প্রায়)
১ একর = ৪০৪৬.৮৬ ব.মি. (প্রায়)।
উদাহরণ ৫। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এলাকা ৭০০ একর। একে নিকটতম পূর্ণসংখ্যক হেক্টরে প্রকাশ কর।
সমাধান : ২.৪৭ একর = ১ হেক্টর
১ " "
৭০০ "
অতএব, নির্ণেয় এলাকা ২৮৩ হেক্টর (প্রায়)।
উদাহরণ ৬। একটি আয়তাকার ক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ৪০ মিটার এবং প্রস্থ ৩০ মিটার ৩০ সে. মি.। ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল কত?
সমাধান : ক্ষেত্রটির দৈর্ঘ্য = ৪০ মিটার = (৪০ X ১০০) সে.মি. = ৪০০০ সে. মি.।
এবং প্রস্থ = ৩০ মিটার ৩০ সে. মি.
= (৩০ x ১০০) সে. মি. + ৩০ সে. মি.
= ৩০৩০ সে. মি.
নির্ণেয় ক্ষেত্রফল = (৪০০০ X ৩০৩০) বর্গ সে. মি. = ১২১২০০০০ বর্গ সে. মি.
= ১২১২ বর্গমিটার ১২ এয়র ১২ বর্গমিটার।
অতএব, ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল ১২ এয়র ১২ বর্গমিটার।
ঘনবস্তুর ঘনফলই আয়তন |
আয়তাকার ঘনবস্তুর আয়তনের পরিমাপ = দৈর্ঘ্যের পরিমাপ X প্রস্থের পরিমাপ x উচ্চতার পরিমাপ |
দৈর্ঘ্যের পরিমাপ, প্রস্থের পরিমাপ ও উচ্চতার পরিমাপ একই এককে প্রকাশ করে আয়তনের পরিমাপ ঘন এককে নির্ণয় করা হয়। দৈর্ঘ্য ১ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ১ সেন্টিমিটারবিশিষ্ট বস্তুর আয়তন ১ ঘন সেন্টিমিটার।
আয়তন পরিমাপে মেট্রিক এককাবলি |
---|
১০০০ ঘন সেন্টিমিটার (ঘন সে. মি.) = ১ ঘন ডেসিমিটার (ঘ. ডেসি.মি.) = ১ লিটার ১০০০ ঘন ডেসিমিটার = ১ ঘন মিটার (ঘ.মি.) ১ ঘন মিটার = ১ স্টেয়র ১০ ঘন স্টেয়র = ১ ডেকা স্টেয়র ১ ঘন সে.মি. (সি.সি.) = ১ মিলিলিটার ১ ঘনইঞ্চি = ১৬.৩৯ মিলিলিটার (প্রায়) |
আয়তনের মেট্রিক ও ব্রিটিশ এককের সম্পর্ক |
---|
১ স্টেয়র = ৩৫.৩ ঘনফুট (প্রায়) ১ ডেকাস্টেয়র = ১৩.০৮ ঘনগজ (প্রায়) ১ ঘনফুট = ২৮.৬৭ লিটার (প্রায়) |
কাজ : ১। তোমার সবচেয়ে মোটা বইটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা মেপে এর ঘনফল নির্ণয় কর। ২। শ্রেণিশিক্ষক কর্তৃক নির্ধারিত অজানা আয়তনের একটি বাক্সের আয়তন অনুমান কর। তারপর এর সঠিক আয়তন বের করে ভুলের পরিমাণ নির্ণয় কর। |
উদাহরণ ৭। একটি বাক্সের দৈর্ঘ্য ২ মিটার, প্রস্থ ১ মিটার ৫০ সে. মি. এবং উচ্চতা ১ মিটার। বাক্সটির আয়তন কত?
সমাধান : দৈর্ঘ্য = ২ মিটার = ২০০ সে. মি.
প্ৰস্থ = ১ মিটার ৫০ সে. মি. = ১৫০ সে. মি.
এবং উচ্চতা = ১ মিটার = ১০০ সে. মি.
বাক্সটির আয়তন = দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x উচ্চতা
= (২০০ X ১৫০ X ১০০) ঘন সে. মি.
= ৩০০০০০০ ঘন সে. মি.
= ৩ ঘনমিটার
বিকল্প পদ্ধতি : দৈর্ঘ্য = ২ মিটার, প্রস্থ = ১ মিটার ৫০ সে. মি. মিটার এবং উচ্চতা = ১ মিটার।
বাক্সটির আয়তন = দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x উচ্চতা
ঘনমিটার
= ৩ ঘনমিটার
নির্ণেয় আয়তন ৩ ঘনমিটার।
উদাহরণ ৮। একটি চৌবাচ্চায় ৮০০০ লিটার পানি ধরে। চৌবাচ্চাটির দৈর্ঘ্য ২.৫৬ মিটার এবং প্রস্থ ১.২৫ মিটার হলে, গভীরতা কত?
সমাধান : চৌবাচ্চাটির তলার ক্ষেত্রফল = ২.৫৬ মিটার x ১.২৫ মিটার
= ২৫৬ সে. মি. × ১২৫ সে. মি.
= ৩২০০০ বর্গ সে. মি.
চৌবাচ্চায় ৮০০০ লিটার বা ৮০০০ X ১০০০ ঘন সে. মি. পানি ধরে। [১০০০ ঘন সে. মি. = ১ লিটার]
অতএব, চৌবাচ্চাটির আয়তন ৮০০০০০০ ঘন সে. মি.
চৌবাচ্চাটির গভীরতা সে. মি. = ২৫০ সে. মি.
= ২.৫ মিটার।
বিকল্প পদ্ধতি :
চৌবাচ্চাটির তলার ক্ষেত্রফল = ২.৫৬ মিটার × ১.২৫ মিটার
= ৩.২ বর্গ মি.
চৌবাচ্চায় ৮০০০ লিটার বা ৮০০০ X ১০০০ ঘন সে. মি. পানি ধরে।
চৌবাচ্চাটির আয়তন ঘন মি. = ৮ ঘন মিটার [১ ঘন মি. = ১০০০০০০ ঘন সে.মি.]
চৌবাচ্চাটির গভীরতা মিটার
= ২.৫ মিটার।
উদাহরণ ৯। একটি ঘরের দৈর্ঘ্য প্রস্থের ৩ গুণ। প্রতি বর্গমিটারে ৭.৫০ টাকা দরে ঘরটির মেঝে কার্পেট দিয়ে ঢাকতে মোট ১১০২.৫০ টাকা ব্যয় হয়। ঘরটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ নির্ণয় কর।
সমাধান : ৭.৫০ টাকা খরচ হয় ১ বর্গমিটারে
১ '' '' '' বর্গমিটারে
১১০২.৫০ '' '' '' বর্গমিটারে
= ১৪৭ বর্গমিটারে
অর্থাৎ, ঘরের ক্ষেত্রফল ১৪৭ বর্গমিটার।
মনে করি, প্রস্থ = ক মিটার
দৈর্ঘ্য = ৩ক মিটার
ক্ষেত্রফল = (দৈর্ঘ্য x প্রস্থ ) বর্গ একক
= (৩ক×ক) বর্গমিটার = ৩ক² বর্গমিটার
শর্তানুসারে,
৩ক² = ১৪৭
বা, ক² =
বা, ক² = ৪৯
ক = = ৭
অতএব, প্রস্থ = ৭ মিটার,
উদাহরণ ১০। বায়ু পানির তুলনায় ০.০০১২৯ গুণ ভারী। যে ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে ১৬ মিটার, ১২ মিটার ও ৪ মিটার, তাতে কত কিলোগ্রাম বায়ু আছে?
সমাধান : ঘরের আয়তন = দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x উচ্চতা
= ১৬ মি. × ১২ মি. × ৪ মি.
= ৭৬৮ ঘনমিটার
= ৭৬৮ × ১০০০০০০ ঘন সে.মি.
= ৭৬৮০০০০০০ ঘন সে.মি.
বায়ু পানির তুলনায় ০.০০১২৯ গুণ ভারী।
১ ঘন সে. মি. বায়ুর ওজন = ০.০০১২৯ গ্রাম
অতএব, ঘরটিতে বায়ুর পরিমাণ = ৭৬৮০০০০০০ × ০.০০১২৯ গ্রাম
= ৯৯০৭২০ গ্রাম
= ৯৯০.৭২ কিলোগ্রাম
ঘরটিতে ৯৯০.৭২ কিলোগ্রাম বায়ু আছে।
উদাহরণ ১১। ২১ মিটার দীর্ঘ এবং ১৫ মিটার প্রস্থ একটি বাগানের বাইরে চারদিকে ২ মিটার প্রশস্ত একটি রাস্তা আছে। প্রতি বর্গমিটারে ২.৭৫ টাকা দরে রাস্তাটিতে ঘাস লাগাতে মোট কত খরচ হবে?
সমাধান :
রাস্তাসহ বাগানের দৈর্ঘ্য = ২১ মি. + (২+২) মি. = ২৫ মিটার
'' '' প্রস্থ = ১৫ মি. + ( ২ + ২) মি. = ১৯ মিটার
রাস্তাসহ বাগানের ক্ষেত্রফল = (২৫ × ১৯) বর্গমিটার
= ৪৭৫ বর্গমিটার
রাস্তাবাদে বাগানের ক্ষেত্রফল = (২১ × ১৫) বর্গমিটার
= ৩১৫ বর্গমিটার
রাস্তার ক্ষেত্রফল = (৪৭৫ – ৩১৫) বর্গমিটার
= ১৬০ বর্গমিটার
ঘাস লাগানোর মোট খরচ = (১৬০ × ২.৭৫) টাকা
= ৪৪০.০০ টাকা
অতএব, ঘাস লাগানোর মোট খরচ ৪৪০ টাকা।
উদাহরণ ১২। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩০ মিটার প্রস্থবিশিষ্ট একটি মাঠের ঠিক মাঝে আড়াআড়িভাবে ১.৫ মিটার প্রশস্ত দুইটি রাস্তা আছে। রাস্তা দুইটির মোট ক্ষেত্রফল কত?
সমাধান : দৈর্ঘ্য বরাবর রাস্তাটির ক্ষেত্রফল = ৪০ × ১.৫ বর্গমিটার
= ৬০ বর্গমিটার
প্রস্থ বরাবর রাস্তাটির ক্ষেত্রফল = (৩০ - ১.৫) × ১.৫ বর্গমিটার
= ২৮.৫ × ১.৫ বর্গমিটার
= ৪২.৭৫ বর্গমিটার
অতএব, রাস্তাদ্বয়ের ক্ষেত্রফল = (৬০ + ৪২.৭৫) বর্গমিটার
= ১০২.৭৫ বর্গমিটার
রাস্তাদ্বয়ের মোট ক্ষেত্রফল ১০২.৭৫ বর্গমিটার।
উদাহরণ ১৩। ২০ মিটার দীর্ঘ একটি কামরার মেঝে কার্পেট দিয়ে ঢাকতে ৭৫০০ টাকা খরচ হয়। যদি ঐ কামরাটির প্রস্থ ৪ মিটার কম হতো, তবে ৬০০০ টাকা খরচ হতো । কামরাটির প্রস্থ কত?
সমাধান : কামরার দৈর্ঘ্য ২০ মিটার। প্রস্থ ৪ মিটার কমলে ক্ষেত্রফল কমে (২০ মিটার × ৪ মিটার)
= ৮০ বর্গমিটার
ক্ষেত্রফল ৮০ বর্গমিটার কমার জন্য খরচ কমে (৭৫০০ – ৬০০০) টাকা
= ১৫০০ টাকা
১৫০০ টাকা খরচ হয় ৮০ বর্গমিটারে
১ '' '' '' ''
৭৫০০ '' '' '' '' বা ৪০০ বর্গমিটারে
অতএব, কামরার ক্ষেত্রফল ৪০০ বর্গমিটার।
মিটার
= ২০ মিটার
কামরাটির প্রস্থ ২০ মিটার।
উদাহরণ ১৪। একটি ঘরের মেঝের দৈর্ঘ্য ৪ মিটার এবং প্রস্থ ৩.৫ মিটার। ঘরটির উচ্চতা ৩ মিটার এবং এর দেওয়ালগুলো ১৫ সে. মি. পুরু হলে, চার দেওয়ালের আয়তন কত?
সমাধান : দেওয়ালের পুরুত্ব ১৫ সে.মি.
চিত্রানুসারে, দৈর্ঘ্যের দিকে ২টি দেওয়ালের ঘনফল =
(৪ + ২ × ০.১৫) × ৩ × ০.১৫ × ২ ঘনমিটার = ৪.৩ × ৩ × ০.১৫ × ২ ঘন মিটার
= ৩.৮৭ ঘনমিটার
এবং প্রস্থের দিকে ২টি দেওয়ালের আয়তন = ৩.৫ × ৩ × 0.১৫ × ২ ঘনমিটার
= ৩.১৫ ঘনমিটার
দেওয়ালগুলোর মোট আয়তন = (৩.৮৭ + ৩.১৫) ঘনমিটার
= ৭.০২ ঘনমিটার
নির্ণেয় আয়তন ৭.০২ ঘনমিটার।
উদাহরণ ১৫। একটি ঘরের ৩টি দরজা এবং ৬টি জানালা আছে। প্রত্যেকটি দরজা ২ মিটার লম্বা এবং ১.২৫ মিটার চওড়া, প্রত্যেক জানালা ১.২৫ মিটার লম্বা এবং ১ মিটার চওড়া। ঐ ঘরের দরজা জানালা তৈরি করতে ৫ মিটার লম্বা ও ০.৬০ মিটার চওড়া কয়টি তক্তার প্রয়োজন?
সমাধান : ৩টি দরজার ক্ষেত্রফল = (২ × ১.২৫) × ৩ বর্গমিটার
= ৭.৫ বর্গমিটার
৬টি জানালার ক্ষেত্রফল = (১.২৫ × ১) × ৬ বর্গমিটার
= ৭.৫ বর্গমিটার
দরজা ও জানালার মোট ক্ষেত্রফল = (৭.৫ + ৭.৫) বর্গমিটার = ১৫ বর্গমিটার
একটি তক্তার ক্ষেত্রফল = (৫ × ০.৬) বর্গমিটার = ৩ বর্গমিটার
নির্ণেয় তক্তার সংখ্যা = দরজা ও জানালার মোট ক্ষেত্রফল ÷ তক্তার ক্ষেত্রফল
= (১৫ ÷ ৩) টি
= ৫ টি
উদাহরণ ১৬। একটি আয়তাকার লোহার টুকরার দৈর্ঘ্য ৮.৮ সে. মি, প্রস্থ ৬ সে.মি ও উচ্চতা ২.৫ সে. মি.। লোহার টুকরাটিকে ১৫ সে.মি. দৈর্ঘ্য, ৬.৫ সে.মি. প্রস্থ ও ৪ সে.মি. উচ্চতার আয়তাকার পাত্রে রেখে পানি দ্বারা পূর্ণ করা হল। লোহা পানির তুলনায় ৭.৫ গুণ ভারী।
ক. পানির পাত্রের আয়তন নির্ণয় কর।
খ. লোহার টুকরার ওজন নির্ণয় কর।
গ. পাত্রটিপানি পূর্ণ অবস্থায় লোহার টুকরাটি তুলে আনা হলে, পাত্রের পানির উচ্চতা কত হবে?
সমাধান : (ক) পানির পাত্রটির দৈর্ঘ্য ১৫ সে.মি.
প্রস্থ ৬.৫ সে.মি.
এবং উচ্চতা ৪ সে.মি.
পানির পাত্রটির আয়তন = (১৫ × ৬.৫ × ৪) ঘন সে.মি.
= ৩৯০ ঘন সে.মি.
(খ) লোহার টুকরাটির দৈর্ঘ্য ৮.৮ সে.মি.
প্রস্থ ৬ সে.মি.
এবং উচ্চতা ২.৫ সে.মি.
লোহার টুকরাটির আয়তন = (৮.৮ × ৬ × ২.৫)
= ১৩২ ঘন সে.মি.
আমরা জানি,
১ ঘন সে.মি. পানির ওজন ১ গ্রাম
এবং দেয়া আছে লোহা পানির তুলনায় ৭.৫ গুন ভারী
১ ঘন সে.মি. লোহার ওজন (১×৭.৫) গ্রাম
১৩২ ঘন সে.মি. লোহার ওজন (৭.৫ × ১৩২) গ্রাম
= ৯৯০ গ্রাম
লোহার টুকরাটির ওজন ৯৯০ গ্রাম
(গ) পানির পাত্রের আয়তন ৩৯০ ঘন সে.মি.
লোহার টুকরাটির আয়তন ১৩২ ঘন সে.মি.
লোহার টুকরাসহ পানিপূর্ণ পাত্র থেকে লোহার টুকরাটিকে তুলে
আনা হলে পাত্রের অবশিষ্ট পানির আয়তন = (৩৯০-১৩২) ঘন সে.মি.
= ২৫৮ ঘন সে.মি.
পাত্রের অবশিষ্ট পানির উচ্চতা x সে.মি. হলে
x × ১৫ × ৬.৫ = ২৫৮
বা x
= ২.৬৫ (প্রায়)
পাত্রের অবশিষ্ট পানির উচ্চতা ২.৬৫ সে.মি. (প্রায়)